এখানে যারা আছেন, যারা এখনো ক্যারিয়ার শুরুই করেননি, তারা কি সত্যিই পিছিয়ে আছেন? ‘পিছিয়ে থাকা’ কাকে বলে? আমার শুরু যেভাবে। জীবনের মোড় বদলানো। সিদ্ধান্তহীনতার গল্প। Never it’s too late to realize it’s already getting late.
আমার কোনো Aim in Life ছিলো না, শুধু এক্সামের খাতায় ছাড়া। কেউ একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, life এবং career নিয়ে আপনার আগামী ১০ বছরের plan কী? আমি উত্তর দিয়েছিলাম, আমি আমার জীবনে ১০ মিনিটের planও কখনো করতে পারিনি। Still I’m happy. No regrets! এক জীবনে মানুষ কতোটুকুই বা পায়? আমি প্রতি মুহূর্তের দুনিয়ায় বেঁচে থাকা মানুষ। এতো ক্যারিয়ারিস্ট হয়ে বেঁচে কী লাভ?
ক্যারিয়ার কী? ভালো ক্যারিয়ারে কী কী থাকে? আমি মনে করি, ৩টা জিনিস থাকে।
খুব ভালো কিছু করতে যে খুব বেশি সময় নিয়ে করতে হয়, তা কিন্তু নয়। আমার ধারণা, সুন্দর কিছু ক'রতে পরিশ্রম কিংবা বুদ্ধিমত্তার চাইতেও আবেগটাই বেশি দরকার। কম সময়ে অনেক কিছু ক'রতে জানাটা মস্তো বড়ো একটা আর্ট। …… কেউ কথা রাখেনি। You fill up my senses. দস্তয়ভস্কির গল্প।
ফিরে দেখা। নোবডি হয়ে থাকার গল্প। সবচেয়ে বাজে রেজাল্ট করা ছেলেটার গল্প; যার একটা সময়ে অনার্স কমপ্লিট করারই কথা ছিলো না, যাকে নিয়ে কেউ কখনো স্বপ্ন দেখেনি। কারোর কাছ থেকে পাত্তা না পাওয়াটা ভয়াবহ কষ্টের একটা ব্যাপার। অপমানের দিনগুলো, কান্নার রাতগুলো। ‘কিছু করা’ বলতে কী বোঝায়? বিষের পেয়ালার হার ও অতঃপর। স্রেফ বেঁচে থাকলেও অনেককিছু হয়৷ সাঁতারু ও জলকন্যা পড়েছেন?
Your passion pays!! Books, movies, music & of course Facebook!! No matter, whatever it is!! Basically, you’re what you love!!
অন্য কারোর জীবনে না বাঁচা, জীবনের সাথে কম্প্রোমাইজ না করা একজন সুখী অসফল অ্যাক্সিডেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারের গল্প, একজন হতাশাগ্রস্ত উদ্যোক্তার গল্প। Happy to be derailed! Thank you God, you didn’t listen to my prayers!
একটা কথা খুব সত্য৷ এ্যাকাডেমিক্যালি কেউ ভালো স্টুডেন্ট হওয়া মানেই কিন্তু তার ক্যারিয়ার ভালো হবে, এমন নাও হ’তে পারে৷ শেষ হাসিটা হাসার চেষ্টা করুন৷ মাঝের কিছুটা সময় না হয় কাটুক কান্নায়, অবহেলায়, তাচ্ছিল্যে৷
ক্যারিয়ার শুরু করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস ক’রে নিন, কী আপনার ভালো লাগে৷ অন্যেরা এর উত্তর দিতে পারবে না৷ ওরা বড়োজোর জানে, কী আপনার ভালো লাগা উচিত৷ অন্য দশ জনের মতো ক’রে ভাববার মস্তো বড়ো অসুবিধে হ’চ্ছে এই, আপনি আসলে যতোটুকু করার ক্ষমতা রাখেন, সেটা একটা বাঁধাধরা ছকে প’ড়ে যায় এবং আপনার অ্যাচিভমেন্ট এমন কিছু হয় না, যেটাকে আলাদা ক’রে বলা যায় কিংবা দেখা যায়৷ আপনার জীবনটাকে আপনি গড়পড়তায় ফেলবেন কিনা, It’s your choice.
কোনো কাজ করার সবচেয়ে কঠিন ধাপ ২টিঃআপনি আসলে কী করতে চান, কীভাবে করতে চান, কেনো করতে চান সেটা ঠিক করা।কাজটা সত্যি সত্যি শুরু করা। কোনো কাজ শুরু করার সবচেয়ে সহজ টেকনিক হল, কাজটা সত্যিই শুরু করে দেয়া।
সাফল্যের জন্যে আত্মবিশ্বাস জরুরী, নাকি আত্মবিশ্বাসের জন্যে সাফল্য জরুরী?
বিসিএস পরীক্ষার ডিফিকাল্টি লেভেল আমার কাছে কিছুটা overrated বলেই মনে হয়েছে৷ এগুলো কম্পিটিটিভ এক্জাম, এটা যতটা সত্য, রিয়েল কম্পিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট খুব বেশি সাধারণতঃ থাকেনা, এটা আরো বেশি সত্য৷ বেশিরভাগ মানুষই এই ২টা এক্সাম নিয়ে ভয় দেখাতেই বেশি পছন্দ করেন। যা জানেন, তা বলেন; যা জানেন না, তাও বলেন। ২টা ফ্যাক্ট শেয়ার করি।
এই এক্সামগুলোতে ৫০% ক্যান্ডিডেট যায় জাস্ট ঘুরতে কোনো কারণ ছাড়াই, অনেকটা গেট-টুগেদার করতে। (মজার ব্যাপার হলো, এদের কেউকেউ সফলও হয়ে যায়! veni, vidi, vici টাইপের আরকি!)
রিয়েল কম্পিটিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট থাকে মাত্র ৭% এর মতো।..
মাই এক্সপেরিয়েন্স উইথ বিসিএস প্রিলি + রিটেন
১০ম থেকে ৩৪তম বিসিএস, পিএসসি’র নন-ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো (সম্ভব হলে অন্ততঃ ২৫০-৩০০ সেট) বুঝে solve করে ফেলুন। রিভিশন দেবেন অন্তত ২-৩ বার। Read the mind of the question setter, not the mind of the guidebook writer. ৪ ঘণ্টা না বুঝে study করার চাইতে ১ ঘণ্টা questions study করা ভালো। তাহলে ৪ ঘণ্টার পড়া ২ ঘণ্টায় পড়া সম্ভব। Apply the POE. বেশি বেশি প্রশ্নের প্যাটার্ন study করলে, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় টপিক বাদ দিয়ে পড়া যায়, সেটা শিখতে পারবেন। এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রাথমিক ধাপ। এর জন্যে যথেষ্ট সময় দিন। অন্যরা যা যা পড়ছে, আমাকেও তা-ই তা-ই পড়তে হবে। এই ধারণা ঝেড়ে ফেলুন।
Invent your own style.
বেশিরভাগ স্টুডেন্টই প্রথমে রেফারেন্স বই পড়ে, পরে প্রশ্ন সলভ করা শুরু করে। এখানে ২টা সমস্যা আছে।এক। বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ করার সময় পাওয়া যায় না। যত বেশি প্রশ্ন সলভ করবেন, ততই লাভ।দুই। রেফারেন্স বইগুলোর বেশিরভাগ অংশই বিসিএস পরীক্ষার জন্যে কাজে লাগে না, অথচ পুরো বই পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট হয় এবং বিসিএস নিয়ে অহেতুক ভীতি তৈরি হয়। তাছাড়া অতকিছু মনে রাখার দরকারও নেই।তাই, উল্টো পথে হাঁটুন। আমিও তা-ই করেছিলাম।
আজাইরা ফালতু জিনিসপত্র পড়া বাদ দিন৷ বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্যে আপনি কী কী পড়বেন, সেটা ঠিক করার চাইতে অনেক বেশি জরুরী আপনি কী কী পড়বেন না, সেটা বুঝতে পারা৷ রেফারেন্স বই পড়ুন আর না-ই পড়ুন, বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ্ করা ফরজ৷ যে জানে, সে সফল নাও হ'তে পারে; কিন্তু যে সফল, সে নিশ্চয়ই জানে৷ (না জানলেও জানে) অসফল পণ্ডিত অপেক্ষা সফল গর্দভ উত্তম৷ যাঁরা বিসিএস নিয়ে থাকেন, তাঁরা দুই টাইপের হ’য়ে ওঠেন৷ এক। বিসিএস বিশেষজ্ঞ৷ দুই। বিসিএস ক্যাডার৷ ...... ক্যাডার হোন৷
একটা বুদ্ধি দিই৷ বিসিএস পরীক্ষার জন্য যেকোনো বিষয়ের রেফারেন্স পড়ার একটা ভালো টেকনিক হচ্ছে, জ্ঞান অর্জনের জন্য না প'ড়ে, মার্কস্ অর্জনের জন্য পড়া৷ এটা করার জন্য আগে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নগুলো প'ড়ে প'ড়ে কোন টাইপের প্রশ্ন আসে না, সেই আইডিয়াটা নিন৷ আরো ভালো হয়, প্রিলি আর রিটেন'এর প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখে, এরপর রেফারেন্স বই 'বাদ দিয়ে বাদ দিয়ে' পড়ুন৷ যেমন, বাংলা সাহিত্যের জন্য যদি কেউ মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (কথার কথা) প'ড়তে চান, আগেই প্রিলিতে সাহিত্যের প্রশ্ন + রিটেনে সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন কী কী টাইপের আসে মাথায় ম্যাপিং ক'রে ফেলুন৷ এরপর পড়ুন৷ কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় ভালো করার বেস্ট ওয়ে, আগে রেফারেন্স বই প'ড়ে তারপর প্রশ্ন সলভ্ করা নয়; বরং প্রশ্ন সলভ্ ক'রতে ক'রতে রেফারেন্স বই পড়া৷ সবকিছু পড়ার সহজাত লোভ সামলান। একটি অপ্রয়োজনীয় topic একবার পড়ার চেয়ে প্রয়োজনীয় topic গুলো বার বার পড়ুন৷
প্রিলির জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা টাইপের বইপত্র পড়া বাদ দিন৷ একেবারেই সাম্প্রতিক বিষয় থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসে বড়জোর ২-৩টা, যেগুলো শুধু ওই বইগুলোতেই পাওয়া যায়৷ এরমধ্যে অন্তত ১টা পেপারটেপার প'ড়ে আনসার করা যায়৷ বাকি ২টাকে মাফ ক'রে দিলে কী হয়?! এই ২-১ মার্কসের এ্যাতো পেইন কোন দুঃখে পাব্লিক নেয়, আমার মাথায় আসে না৷ আসলে, ওই যন্ত্রণাদায়ক বইগুলো প'ড়লে নিজের কাছে কেমন জানি প'ড়ছি প'ড়ছি মনে হয়৷ এটা অতি উচ্চমার্গীয় ফাঁকিবাজির পর্যায়ে পড়ে৷ একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ প্রিলিমিনারি হাইয়েস্ট মার্কস্ পাওয়ার পরীক্ষা নয়, স্রেফ পাস করার পরীক্ষা৷
বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা মূলতঃ চারটি বিষয়ের উপর অনেকংশে নির্ভর করে---ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলা৷ এই চারটি বিষয় বেশি জোর দিয়ে পড়ুন৷ শুধু সাধারণ জ্ঞানে সুপণ্ডিত তোতাপাখিসদৃশ ব্যক্তিবর্গ বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণত ফেল করে অথবা অতি সাধারণ মানের রেজাল্ট করে৷ সাধারণ জ্ঞানে বেশি পণ্ডিত হয়ে লাভ নাই, কারণ ওই segment-টাতে সাধারণত average marks আসে, তাই অন্যান্য ক্যান্ডিডেটের তুলনায় আপনি খুব বেশি marks পেয়ে কোনো competitive advantage পাবেন না। প্রিপারেশন নিচ্ছি নিচ্ছি---নিজেকে এবং অন্য সবাইকে এটা বোঝানোর চাইতে সত্যি সত্যি প্রিপারেশন নেয়া ভালো। প্রিপারেশন প্রিপারেশন ভাব, প্রিপারেশনের অভাব। কম্পিটিটিভ এক্সামে এটা হয়। মাথায় রাখুন, Only your results are rewarded, not your efforts. অনেক পরিশ্রম করে ফেল করার চাইতে, বুঝেশুনে পরিশ্রম করে পাস করা ভালো।
বিসিএস পরীক্ষা বার বার দেয়া যায়, এটা সত্যি। কিন্তু তার চেয়ে বড় সত্যি, এটা একবারে পাস না করার পানিশমেন্ট হল, এই বিরক্তিকর ক্লান্তিকর পড়াগুলো আরেকবার পড়তে হবে। আমার বেলায় এই ভয়টা মোটিভেশন হিসেবে কাজ করেছে। এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষাও তো ৪ বার দেয়া যায়। ওইসময়ে কেউ যদি আপনাকে বলতো, ১ম বার এক্সপেরিএন্স হোক, পরেরবার ভালো করে দিয়ো। এটা শুনলে কি রাগ হতো না?
যে প্রশ্নগুলো একটু কঠিন মনে হয়, সেগুলো একাধিকবার পড়ুন৷ একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷
বিসিএস পরীক্ষায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি---এই বিষয়গুলোতে প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন৷ যথাস্থানে বিভিন্ন ডাটা, টেবিল, চার্ট, রেফারেন্স দিন৷
কোন কোন সেগমেন্ট-এ ক্যান্ডিডেট’রা সাধারণতঃ কম মার্কস্ পায় কিন্তু বেশি মার্কস্ তোলা সম্ভব, সেগুলো নির্ধারণ করুন এবং নিজেকে ওই সেগমেন্ট’গুলোতে ভালোভাবে প্রস্তুত করে কম্পিটিশনে আসার চেষ্টা করুন৷ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, টীকা, শর্ট নোটস্, সারাংশ, সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ, অনুবাদ, ব্যাকরণ ইত্যাদি ভালোভাবে পড়ুন৷
দাগিয়ে দাগিয়ে রিটেনের গাইড বই পড়ুন৷ সম্ভব হলে, কমপক্ষে ৩-৪ সেট৷ তবে খেয়াল রাখবেন গাইডে অনেক ভুল থাকে৷ এটা স্বাভাবিক৷ তাই পড়ার সময় সংশোধন করে নিতে হবে৷
নোট করে পড়ার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই৷ এতটা সময় পাবেন না৷ বরং কোন প্রশ্নটা কোন সোর্স থেকে পড়ছেন, সেটা লিখে রাখুন৷ রিভিশন দেয়ার সময় কাজে লাগবে৷ বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখুন৷ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে রাখুন৷ প্রয়োজনমত পরীক্ষার খাতায় রেফারেন্স উল্লেখ করে উপস্থাপন করুন৷
বিসিএস’এর জন্য নিয়মিত পেপার পড়ুন৷ সম্ভব হলে অন্তত ৫-৬ টা৷ অনলাইনে পড়তে পারেন৷ এই সময়টাতে পুরো পেপার না পড়ে শুধু যে অংশগুলো পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়, সেগুলোই পড়ুন৷ খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে যা যা বিসিএস পরীক্ষার জন্যে দরকার, প্রয়োজনে সেগুলো ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখুন। কী কী দরকার, সেটা কীভাবে বুঝবেন?
বিভিন্ন রেফারেন্স, টেক্সট ও প্রামাণ্য বই অবশ্যই পড়তে হবে৷ বিসিএস পরীক্ষায় অনেক প্রশ্নই কমন পড়েনা৷ এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা সহজ হয়৷ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে৷ এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার ক’রলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে৷ জানি, অত কোটেশন তো মনে থাকে না। তাহলে কীভাবে কাজটা করবেন? আমি যে টেকনিকগুলো ফলো করেছিলাম, সেগুলো বলছি। ভালো কথা, সংবিধান মুখস্থ করার কোনো দরকারই নাই।
লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই৷ পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷ খেয়াল রাখবেন, যাতে লেখা পড়া যায়৷ সুন্দর উপস্থাপনা মার্কস বাড়ায়৷ বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় লিখতে খুব বেশি কষ্ট হয়। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো, আঙুলের জয়েন্টগুলো মনে হয় এখুনি খুলে পড়ে যাবে। ভাবতাম, I’ve to really perform when I’m performing! আমি তো স্রেফ আমার বাবা-মা আর টেন্ডুলকারের কথা ভেবে ভেবেই রিটেন পার করে দিলাম। একটা গল্প শেয়ার করি। ১৬ বছরের বালকের ‘Main Khelega’ অ্যাটিচিউডের গল্প৷ হারিয়ে না যাওয়ার গল্প৷ আমার লাইফে শেখা সেরা অ্যাটিচিউড৷ আমার মতে, জীবনে বড় হতে হলে habitual ‘selfish’ weakness to greatness থাকাটা জরুরি। যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল তাদের গুণগুলোকে replicate করার চেষ্টা করুন। যে লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চান না কেনো, সেই লক্ষ্যের প্রতি প্রচণ্ড শ্রদ্ধাবোধ রাখুন। নাহলে প্রিপারেশনে ঠিকমতো আন্তরিকতা আসে না।
কোনভাবেই কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না৷ উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে অন্তত কিছু না কিছু লিখে আসুন৷ আপনি প্রশ্ন ছেড়ে আসছেন, এটা কোন সমস্যা না৷ সমস্যা হল, কেউ না কেউ সেটা উত্তর ক’রছে৷ নিজের সাজেশনস্ নিজেই তৈরী করুন৷ কারো সাজেশনস্ ফলো করবেন না৷ এই প্রশ্নটা আসবেই আসবে --- এ জাতীয় কোচিং সেন্টারসুলভ মিথ্যে আশ্বাসে কান দেবেন না৷ আমি অন্তত ৪ বার সাজেশনস রেডি করেছিলাম। আর এটা মাথায় রাখুন, (৪০-৫০)% এর বেশি প্রশ্ন কমন পাবেন না। এইটুকু পেলেও অনেক!
মাঝে মাঝে বিভিন্ন topic নিয়ে ননস্টপ লেখার প্র্যাক্টিস করুন৷ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার অভ্যাস বাড়ান৷ এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে৷ কোনো উত্তরই মুখস্থ করার দরকার নেই৷ বরং বারবার পড়ুন, বিভিন্ন সোর্স থেকে৷ ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গ’ড়ে তুলুন৷
বিসিএস পরীক্ষায় কোন ভাষায় উত্তর লিখবো? ইংরেজিতে? নাকি, বাংলায়? এ প্রশ্ন অনেকেরই৷ আমি বাংলায় লিখেছি, combined merit list-এ প্রথম হ’য়েছি৷ এ ভাষায় ‘আসি’ বলে স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায় … কী আশ্চর্য রহস্য! তাই না? তবে, আপনি ইংরেজিতেও লিখতে পারেন৷ এক্ষেত্রে সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতাই মুখ্য৷
অনেকেই বলবে, আমার তো অমুক অমুক প্রশ্ন পড়া শেষ! ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিন৷ আপনার আগে কেউ কাজ শেষ করলেই যে শেষ হাসিটা উনিই হাসবেন---এমন তো কোন কথা নেই৷ আমি বিসিএস পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি শুরু করতে গিয়ে দেখলাম, অনেকের অনেক কিছু পড়া শেষ। 3 Idiots তো দেখেছেন। বন্ধুর খারাপ রেজাল্টে যতোটা মন খারাপ হয়, বন্ধুর ভালো রেজাল্টে তার চেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয়। যখন দেখলাম, আমি অন্যদের তুলনায় বলতে গেলে কিছুই পারি না, তখন আমি ২টা কাজ করলাম। এক। বোঝার চেষ্টা করলাম, ওরা যা পারে, সেটা পারাটা আদৌ দরকার কিনা? দুই। ওদের সাথে নিজেকে কম্পেয়ার করা বন্ধ করে গতকালকের আমি’র সাথে আজকের আমি’কে কম্পেয়ার করা শুরু করলাম।
মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার লক্ষণ না৷ Why so serious? Job for Life, not Life for Job. তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন৷ মাঝেমধ্যেই৷ দু’দিন পড়া হ’লো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোন মানে হয়না৷ অনুশোচনা করার সময় কোথায়?গ্রুপ স্টাডি করা কতোটুকু দরকার? এটা আপনার অভ্যেসের উপর নির্ভর করে। আমার নিজের এই অভ্যেস ছিলো না। আমি গ্রুপ স্টাডি করতাম না ২টা কারণে। এক। যখন দেখতাম, সবাই অনেককিছু পারে, যেগুলোর কিছুই আমি পারি না, তখন মন খারাপ হতো। আমি পারি না, এটা ভাবতে ভালো লাগে না। The Pursuit of Happyness এর ডায়লগটা মনে আছে তো? দুই। সবার সাথে পড়লে বেশি বেশি গল্প করতে ইচ্ছে করতো, আর মনে হতো, ওরা যেটা করছে সেটা ঠিক, আমার নিজেরটা ভুল। অন্ধ অনুকরণ করতে ভালো লাগে না।
লিখেছেন_
বিসিএস পরীক্ষা'র সাতসতেরো
সুশান্ত পাল, প্রথম স্থান অধিকারী, 30 তম বিসিএস
বর্তমানে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার
No comments:
Write comments